রিয়াজ উদ্দিন রুবেল,নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার ০৬ নং চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া গ্রামের ০১ নং ওয়ার্ডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে দিনমজুর নুর নবী’র(৪০) বসত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
গত ২২ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২ ঘটিকায় কুকিজ মার্কেট সংলগ্ন আবুল দরবেশ বাড়িতে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শারমিন আক্তার(২৪) জানান, আমাদের বাড়িতে আলাদা আলাদা চারটি ঘর রয়েছে। সেদিন বাড়িতে কেউ ছিলোনা। আমি রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠ্যাৎ দেখতে পাই তাদের ঘরের উপর থেকে ধৌঁয়া বের হচ্ছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তা পুরা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। আমি চিৎকার করতে থাকি,আমার চিৎকার শুনে এলাকার মানুষ ছুটে আসে এবং তারা পানি মারতে শুরু করে। আগুনের তীব্রতা এতই বেশি ছিলো যে ঘরের নিকটে গিয়ে পানি মেরে আগুন নেভানো সম্ভব হচ্ছিলোনা। একটা সময় লক্ষ্য করি বিদ্যুতের তার যখন পুড়ে মাটিতে পড়ে যায় তখন আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। আমরা ধারণা করছি বিদ্যুতের তার থেকেই এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। দিনমজুর মো: নুর নবী জানান, আমি একজন দিনমজুর, মাঠে কাজ করলে পেটে ভাত আসে। হঠাৎ এমন দুর্ঘটনা ঘটবে এটা কখনো আশাও করিনি। আমি থাকার জন্য একটি ঘর চাই,যাতে আমি আমার স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে থাকতে পারি। দিনমজুর নুরনবী’র স্ত্রী ফিরোজা খাতুন(৩২) অশ্রুভেজা নয়নে বলেন, ঈদের পরের দিন আমার দুই মেয়ে বিবি রহিমা(১৫), বিবি ফাতেমা(০৭) ও স্বামী নূর নবীকে নিয়ে সকাল ১১ ঘটিকার সময় একই উপজেলার ০২ নং চরবাটা ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়।
দুপুর ২ টার সময় খবর আসে আমাদের বসত ঘরে আগুন লাগে। এটি শুনে তাৎক্ষণিক বাবার বাড়ি থেকে এসে দেখি আমার বসত ঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘর থেকে কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো জানান, আমার স্বামী একজন দিনমজুর, তিনি খেতখামারে কাজ করেন। আমাদের একমাত্র বসত ঘরটি এখন আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরের ভেতর থেকে এক টাকার জিনিসপত্রও বের করতে পারিনি। সবকিছু আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। আজ ৫ দিন হয়ে গেলেও কেউ আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। আমার স্বামী ও দুই মেয়ে নিয়ে এখন পাশের অন্যের ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু এভাবে আর কতো দিন অন্যের ঘরে থাকবো। আমার স্বামীর সে সামর্থ্য নাই যে তিনি নতুন করে ঘর দিবেন। তিনি একজন সামান্য দিনমজুর। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘর চাই,তিনি যেনো আমাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন। নুর নবী’র বড় মেয়ে বিবি রহিমা(১৫) বলেন, আমি নবম শ্রেণীতে পড়ি। আমরা আমাদের নানুর বাড়িতে বেড়াতে গেলে দুপুরে খবর আসে আমাদের ঘরে আগুন লাগে। আমরা তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসলে দেখি আমাদের ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার পড়ার বইপত্র,জামা কাপড়সহ সবকিছু একেবারে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার বাবা একজন গরিব দিনমজুর। আমার বাবার পক্ষে নতুন করে ঘর দেয়া সম্ভব না। আমরা এখন অন্যের ঘরে থাকি।
আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে থাকার জন্য একটি ঘর চাই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: বেলায়েত হোসেন জানান, এ বিষয়ে আমি অবগত আছি। ক্ষতিগ্রস্ত মো: নুর নবী’সহ তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসনের নিকট পাঠিয়েছি। আশা করছি তারা অতি শিগ্রই ঘর পাবেন এবং আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য সহযোগীতা থাকবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।